আমি একজন বাঙালি সুন্নী মুসলমান। মুসলমানদের দিন শুরু হয় সূর্যাস্তের পর থেকে।আমরা চাঁদ দেখার জন্য অপেক্ষা করি। চাঁদ দেখা গেলো জামে মসজিদ থেকে ঘোষণা দিলো "সম্মানিত মুসলিম সম্প্রদায়,ঈদ মোবারক! ঈদ মোবারক! পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল ঈদ। সকাল ৮.৩০ মিনিটে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে।" আতশবাজি ফোটানো শুরু হলো চারদিকে, ছোট ছোট বাচ্চারা দল গঠন করলো, তাদের মাঝে কয়েকজন কিশোর, তাঁরা আতশবাজিতে আগুন দেয়, কাজটি খুব সাবধানে করছে তবে বয়োজ্যেষ্ঠদের লক্ষ্য করে তাদের কাছাকাছি ফেলছে, তাঁরা বকাবকি করছে, তাড়া করছে। আমার ঈদ শুভেচ্ছা কার্ড বানানো শেষ,এটি শুধু সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করে সবাইকে পাঠাতে হবে। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে নিলাম।মা সেমাই,পায়েস আর বিরিয়ানী করেছেন।আমি সেমাই খাইনা, দু'কাপ পরিমাণ বিরিয়ানি আর শেষে একটু পায়েস খেলাম। নতুন জামাকাপড়-জুতো পরে,আতর দিয়ে, জায়নামাজ নিয়ে আব্বু ও ছোটভাই ও কাকা-জেঠুদের সাথে ঈদগাহ ময়দানে চললাম। সবাই খুব দ্রুত হাঁটছে। কাতারে বসে পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঈদুল ফিতরের নামাজ শুরু হলো,নামাজ শেষে খুতবা পাঠ শুনলাম, এরই মাঝে কিছু লোক আফ্রিকার নকশায় তৈরী গামছায় দান বা চাঁদার টাকা তুলতে লাগলো, খুতবা শেষে আব্বু ও কাকা-জেঠু এবং এলাকার কিছু মানুষের সাথে কোলাকুলি করলাম।ঈদ বাজার অনেক বড় পসরা, শিশুদের খেলনা সামগ্রী, দোকান গুলোতে মিঠাই সামগ্রী ভরপুর।আমরা দাদা-দাদুর কবর জিয়ারত করে বাসায় গেলাম। আম্মু ও আব্বুকে সালাম করলাম,চাচা বাসায় গেলাম চাচা-চাচিকে সেলাম করলাম, জেঠুর বাসায় গেলাম আর জেঠা-জেঠিকে সালাম করলাম, এ পর্যন্ত মোট সালামি চার হাজার হলো, পেটটা গোলমাল করছে, এত আদর সইতে পারেনা। বন্ধুদের সাথে কুশল বিনিময় করে বাসায় এসে গোসল করে ঈদ জামা খুলে আরেকটি গেঞ্জি-প্যান্ট পরে বসে রইলাম। অনেক মেহমান আসছে, ছোটরা সবাই দলবেঁধে আসে,কারো হাতে বাঁশি,কারো প্লাস্টিকের পিস্তল,কারো হাতে কাঠের হাতলে প্লাস্টিকের কাটা কাটা চাকার খেলনা যেটির চাকাটি ঘুরলে উপরের পাখাটি ঘুরে আর দেখে মনে হয় উপরে থাকা স্থির পাখিটি উড়ার চেষ্টা করছে। বিকেল বেলায় আম্মু সহ আমরা নানুর বাড়ি আসলাম।নানা-নানু,মামা-মামীকে কে সালাম করে সবার সাথে খেতে বসলাম। খাবার শেষে বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়লাম।